ডেঙ্গু কোন ভাষার শব্দ ?

প্রশ্নঃ  ডেঙ্গু কোন ভাষার শব্দ  ? 

প্রশ্নঃ  ডেঙ্গু শব্দটি কোন ভাষা থেকে এসেছে  ? 


ক.  স্পেনীয়

খ.  জাপানি 

গ.  চিনা

ঘ.  তুর্কি


উত্তরঃ (ক) স্পেনীয় শব্দ  । 


ব্যাখ্যাঃ 


 ডেঙ্গু শব্দটি " স্পেনীয় শব্দ " থেকে এসেছে  । 


ডেঙ্গু শব্দটি বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় ব্যবহৃত হয়, তবে এর উৎপত্তি এবং এর নামকরণের প্রেক্ষাপট বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। "ডেঙ্গু" শব্দটি স্প্যানিশ ভাষা থেকে এসেছে বলে ধারণা করা হয়, যা পরবর্তীতে বিভিন্ন ভাষায় ছড়িয়ে পড়েছে। এই রোগটি ভাইরাসজনিত এবং এটি এডিস মশার মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। এই প্রবন্ধে "ডেঙ্গু" শব্দটির উৎপত্তি, এর নামকরণের ইতিহাস, এবং এর বর্তমান ব্যবহারের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।


 ডেঙ্গু শব্দের উৎপত্তি:


"ডেঙ্গু" শব্দটি স্প্যানিশ শব্দ "ডেঙ্গে" থেকে এসেছে, যা প্রায়শই "দেনগে" বা "ডেংগে" হিসাবেও উচ্চারণ করা হয়। স্প্যানিশ ভাষায় "ডেঙ্গে" শব্দটির অর্থ হল "সুন্দর পোষাক বা আড়ম্বরপূর্ণ আচরণ"। তবে, ডেঙ্গু রোগের ক্ষেত্রে শব্দটির ব্যবহার এক অদ্ভুত শরীরের ব্যথা ও অস্বস্তির অনুভূতিকে বোঝায়। সম্ভবত স্প্যানিশ ভাষাভাষীরা রোগটির অদ্ভুত এবং বিরক্তিকর উপসর্গগুলি বোঝানোর জন্য এই শব্দটি ব্যবহার করেছেন।


ডেঙ্গুর ইতিহাস ও নামকরণ:


ডেঙ্গু রোগের ইতিহাস বহু পুরানো। এটি প্রথম শনাক্ত হয়েছিল ১৭৭৯ সালে এবং পরবর্তী কয়েক শতাব্দীতে বিভিন্ন অঞ্চলে এর মহামারী দেখা দেয়। ১৮২৮ সালে আফ্রিকায় এক মহামারীর সময় "ডেঙ্গু" শব্দটি প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল বলে জানা যায়। এর আগে এটি "ব্রেকবোন ফিভার" নামে পরিচিত ছিল, যা এর তীব্র অস্থিব্যথার কারণে এমন নামকরণ করা হয়েছিল।


ডেঙ্গু শব্দটি ব্যবহারের পেছনে আরেকটি তত্ত্ব হলো "কায়ো ডিঙ্গা" নামে একটি সুয়াহিলি শব্দ থেকে এর উৎপত্তি, যার অর্থ "ভঙ্গুর শরীর"। এই তত্ত্বটি অনুযায়ী, ডেঙ্গু রোগের উপসর্গগুলি এমন এক অনুভূতি সৃষ্টি করে যেন শরীর ভেঙ্গে পড়ছে।


 ডেঙ্গুর বর্তমান ব্যবহার ও প্রভাব:


ডেঙ্গু বর্তমানে একটি বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সমস্যা। এডিস মশার মাধ্যমে সংক্রমিত এই রোগটি প্রতিনিয়ত বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে মহামারী আকারে দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপ-গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে এর প্রকোপ বেশি। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়।


ডেঙ্গুর উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে তীব্র জ্বর, মাথাব্যথা, চোখের পিছনে ব্যথা, মাংসপেশির ব্যথা, এবং চামড়ায় ফুসকুড়ি। ডেঙ্গুর তীব্র ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণ ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ব্যর্থতা ঘটতে পারে, যা ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার (DHF) এবং ডেঙ্গু শক সিনড্রোম (DSS) হিসেবে পরিচিত।


 প্রতিরোধ ও চিকিৎসা:


ডেঙ্গুর প্রতিরোধে এডিস মশার বংশ বিস্তার রোধ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্থির পানির উৎস ধ্বংস করা, মশারির ব্যবহার, এবং মশারোধক স্প্রে প্রয়োগ করা ডেঙ্গু প্রতিরোধের কিছু কার্যকর পদ্ধতি। এছাড়া, ডেঙ্গুর কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নেই। উপসর্গ নিরাময়ের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। রোগীর পর্যাপ্ত বিশ্রাম, তরল গ্রহণ, এবং ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা হয়।


 উপসংহার:


"ডেঙ্গু" শব্দটি স্প্যানিশ ভাষা থেকে উদ্ভূত হলেও এটি এখন বৈশ্বিক পরিসরে একটি পরিচিত নাম। ডেঙ্গু রোগটি বর্তমানে একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা এবং এর প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক সচেতনতা ও উদ্যোগ প্রয়োজন। ডেঙ্গু শব্দটির উৎপত্তি ও ইতিহাস আমাদের ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং রোগের বিশ্বায়নকে বোঝাতে সাহায্য করে।

Next Post Previous Post