২০২৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান কে ?

প্রশ্ন:  ২০২৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান কে ?


ক.  মালালা ইউসুফ 

খ.  লুইজ গ্লিক

গ.  জন ফসে

ঘ.  ক্লডিয়া গোল্ডিন


উত্তর:  (গ) জন ফসে । 


ব্যাখ্যা:-


২০২৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন নরওয়েজিয়ান লেখিকা জন ফসে। জন ফসে একজন প্রখ্যাত নাট্যকার, ঔপন্যাসিক এবং কবি। তাঁর সাহিত্যকর্মে মানব জীবনের গভীরতা ও সংবেদনশীলতা প্রতিফলিত হয়। জন ফসে নরওয়েতে জন্মগ্রহণ করেন এবং তার সাহিত্যিক জীবনের শুরু থেকেই তিনি নানা ধরনের সাহিত্য রচনা করেছেন, যা আন্তর্জাতিক মহলে বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

ফসের সাহিত্যকর্মে সাধারণত মানবজীবনের অন্তর্গত বেদনা, বিচ্ছেদ ও একাকিত্বের বিষয়গুলি ফুটিয়ে তোলা হয়। তাঁর লেখার ধরণ খুবই সহজ ও সংবেদনশীল, যা পাঠকদের মনকে ছুঁয়ে যায়। ফসে নরওয়ের পশ্চিম উপকূলের একটি ছোট শহর হাওগেসুন্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর রচনার মধ্যে সাধারণ মানুষের জীবনের গল্পগুলো খুব গভীরভাবে ও নিখুঁতভাবে তুলে ধরা হয়। 

জন ফসে তার নাট্যকার হিসাবে খ্যাতির জন্যই বেশিরভাগ পরিচিত, কিন্তু তিনি একজন প্রতিভাবান ঔপন্যাসিক ও কবিও। তাঁর নাটকগুলি সাধারণত শূন্যতা ও নীরবতার মাধ্যমে মানুষের মনের গভীর অনুভূতিগুলি প্রকাশ করে। তার লেখা নাটকগুলির মধ্যে "And We’ll Never Be Parted" (এন্ড উইল নেভার বি পার্টেড), "Someone is Going to Come" (সামওয়ান ইজ গোয়িং টু কাম) এবং "The Name" (দ্য নেইম) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

ফসে কেবল নাটক লিখে সীমাবদ্ধ থাকেননি, বরং তাঁর উপন্যাসগুলিও আন্তর্জাতিক মহলে সমাদৃত হয়েছে। তাঁর উপন্যাসগুলির মধ্যে "Melancholy" (মেলানকলি), "Aliss at the Fire" (অ্যালিস অ্যাট দ্য ফায়ার) এবং "Morning and Evening" (মর্নিং এন্ড ইভনিং) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই উপন্যাসগুলিতে জীবনের ক্ষণস্থায়িত্ব, মানবজীবনের দুঃখ ও একাকিত্বের বিষয়গুলি অত্যন্ত সংবেদনশীলভাবে প্রকাশিত হয়েছে।

জন ফসের সাহিত্যিক জীবনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো তাঁর লেখা ভাষার প্রাঞ্জলতা ও সরলতা। তাঁর লেখাগুলিতে প্রায়ই দেখা যায় খুবই সাধারণ কথোপকথন ও নীরবতার মাধ্যমে গভীর অনুভূতি প্রকাশ করা হয়। ফসের রচনাগুলি মানবজীবনের গভীরতা ও বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি হিসাবে দেখা যেতে পারে। 

নোবেল কমিটি জন ফসে সম্পর্কে বলেছে, "তিনি এমন এক সাহিত্যিক, যিনি তাঁর লেখা মাধ্যমে শূন্যতা ও নীরবতার মধ্যে দিয়ে মানব জীবনের গভীরতাকে প্রকাশ করেছেন।" ফসে সাহিত্যের মাধ্যমে মানুষের মনের অভ্যন্তরীণ জগতের অনুভূতি ও আবেগকে খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।

ফসে তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় নরওয়েতে কাটিয়েছেন, তবে তিনি বিভিন্ন সময়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেছেন। তাঁর সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসা অর্জন করেছেন এবং তাঁর লেখা নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

২০২৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পাওয়া জন ফসের সাহিত্যকর্ম শুধু নরওয়ে নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের সাহিত্যপ্রেমীদের মন জয় করেছে। তাঁর রচনা পাঠকদের মনকে ছুঁয়ে যায় এবং মানবজীবনের গভীরতা ও বাস্তবতা সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে। সাহিত্যে তাঁর এই অসাধারণ অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে, যা তাঁকে আন্তর্জাতিক সাহিত্যের জগতে এক উচ্চমর্যাদার স্থানে অধিষ্ঠিত করেছে।


Next Post Previous Post