গির্জা কোন ভাষার শব্দ ?

প্রশ্ন:  গির্জা কোন ভাষার শব্দ ? 

প্রশ্ন:  গির্জা শব্দটি কোন ভাষার শব্দ থেকে বাংলা ভাষায় এসেছে ? 


ক.  ফরাসি 

খ.  পর্তুগিজ

গ.  চীনা 

ঘ.  পাঞ্জাবি 


উত্তর:  (খ) পর্তুগিজ শব্দ  । 


ব্যাখ্যাঃ 

 গির্জা শব্দটি 'পর্তুগিজ' শব্দ ।

গির্জা শব্দের উৎপত্তি ও ব্যবহার

'গির্জা' শব্দটি বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত একটি প্রচলিত শব্দ, যার অর্থ হলো খ্রিস্টানদের উপাসনালয়। শব্দটি মূলত পর্তুগিজ ভাষা থেকে বাংলায় এসেছে। পর্তুগিজ শব্দ "igreja" (ইগ্রেজা) থেকে এটি উদ্ভূত হয়েছে, যার অর্থও উপাসনালয়। বাংলায় পর্তুগিজদের আগমনের সময় (১৫শ-১৬শ শতাব্দী) এ শব্দটি বাংলায় প্রবেশ করে।

ইতিহাস বলছে, খ্রিস্টান মিশনারিদের সাথে পর্তুগিজরা ভারতবর্ষে আসে এবং বাংলা অঞ্চলে তাদের ধর্মীয় কার্যক্রম শুরু করে। সেই সময় তারা গির্জা নির্মাণ করেছিল, যা ছিল তাদের ধর্মীয় উপাসনার স্থান। স্থানীয় জনগণ এই উপাসনালয়কে পর্তুগিজদের ভাষা অনুযায়ী "ইগ্রেজা" বলে ডাকতে শুরু করে, যা ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়ে 'গির্জা' রূপে বাংলায় গৃহীত হয়।

বাংলা ভাষায় 'গির্জা' শব্দটি বিশেষভাবে খ্রিস্টান ধর্মের উপাসনাস্থল বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। গির্জাগুলি প্রার্থনা, উপাসনা, বিবাহ, এবং অন্যান্য ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পরিচালনার কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্থাপত্যশৈলীর দিক থেকেও গির্জাগুলি অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর, যা মধ্যযুগীয় ইউরোপীয় নির্মাণশৈলীর প্রভাব বহন করে।

বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে গির্জার সংস্কৃতিতে একটি বৈচিত্র্য লক্ষ করা যায়। কলকাতার সেন্ট পলস ক্যাথেড্রাল, ঢাকার লাল গির্জা, এবং চট্টগ্রামের সেন্ট প্লাসিডস গির্জা এর উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।

বাংলা ভাষার শব্দভান্ডারে 'গির্জা' শব্দটি শুধু ধর্মীয় অর্থেই নয়, সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বের দিক থেকেও একটি অনন্য স্থান দখল করে আছে। এটি ধর্মীয় ঐক্যের প্রতীক এবং ভাষার বহিরাগত প্রভাবের এক উজ্জ্বল উদাহরণ।

পর্তুগিজ শব্দ - 


গির্জা , প্রাদী , কেরানী , মিস্ত্রি , বোবা আয়া , আলাপ , আচাড় , কামরা , জানালা , ইংরেজ , পিস্তল , বালতি , আনারস , আলপিন , গামলা , তোয়ালে , গুদাম , বালতি , চাবি , পেঁপে , আলমিরা , খোঁচা , নোনা , পেয়ার , তামাক  । 
Previous Post